অনলাইন ডেস্ক:

গাইবান্ধার পলাশবাড়িতে ১২ বছরের বিবাহিত জীবনের ইতি টেনে স্ত্রী বিউটি বেগমকে ডিভোর্স দিয়েছেন স্বামী গোলাম মোস্তফা। চূড়ান্তভাবে এই বিচ্ছেদ সম্পন্ন হওয়ায় অনেক খুশি তিনি। দীর্ঘ ১২ বছর পর স্ত্রীর কাছ থেকে মুক্তির আনন্দে গোলাম মোস্তাফা এতটাই উচ্ছ্বসিত যে, এলাকায় দুই মণ জিলাপি বিতরণ করেছেন তিনি। মিষ্টিমুখে অংশ নেয় তার বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনরাও।

রোববার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে পলাশবাড়ি উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের ভবানীপুর বাসুদেবপুর গ্রামে। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের সম্মতি ও স্থানীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এই ডিভোর্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী মো. শাহ আলম সরকার।

এদিকে, ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই এলাকাজুড়েই অনেক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। পেশায় ধান-চাল ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা বাসুদেবপুর গ্রামের ডা. নজির হোসেনের ছেলে। গোলাম মোস্তফা ২০০৯ সালে একই গ্রামের বিউটি বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে ১০ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, বিউটি বেগম গোলাম মোস্তফাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের পর সংসার ভালো চললেও কয়েক বছর পর তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এ নিয়ে তাদের প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। গোলাম মোস্তফা স্ত্রীর ওপর বরাবরেই অতিষ্ঠ ও ক্ষুদ্ধ ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীকে ডিভোর্স দেয়ার প্রক্রিয়া চালান গোলাম মোস্তফা। অবশেষে উভয়ের সম্মতি আর সকলের উপস্থিতিতে ডির্ভোস সম্পন্ন হয়েছে।

স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে অনেক খুশি গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, স্ত্রী বিউটি বেগম অবাধ্য হওয়ায় সংসারে অশান্তি ছিল। বিয়ের ১২ বছরে তার নানা অত্যাচারে জীবনটা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। বারবার চেষ্টা করেও তাকে ডিভোর্স দিতে পারি নাই। শেষ পর্যন্ত উভয়ের সিন্ধান্তে ডিভোর্স সম্পন্ন হয়েছে। এই বিচ্ছেদে বৈবাহিক জীবনের মুক্তি মিলেছে এবং অবসান হয়েছে অতিষ্ঠ জীবনের। এই আনন্দ-উচ্ছাসে গ্রামের মানুষদের মাঝে দুই মণ জিলাপি বিতরণ করেছি। বাড়িতে ডেকে নিয়ে মিষ্টি মুখ করিয়েছি বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনদের।

তিনি আরও বলেন, ১০ বছরের মেয়ে মেঘলা বর্তমানে তার মায়ের কাছে থাকবে। মেঘলা চাইলে তার কাছেও থাকতে পারবে। তবে মায়ের কাছে থাকলেও তার দেখাশুনা করবেন বলেও জানান তিনি।

ডিভোর্সের পর বিউটি বেগম জানান, গোলাম মোস্তফার সাথে সংসার করার ইচ্ছে তারও ছিল না। এখন ডিভোর্স হওয়ায় মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকবেন তিনি। ডিভোর্স দিয়ে গোলাম মোস্তফা শান্তিতে থাক এটাই কামনা করি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী মো. শাহ্ আলম সরকার বলেন, উভয়ের আলোচনা ও সম্মতিতে রেজিস্ট্রির মাধ্যমে তাদের ডিভোর্স সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় উভয় পরিবারের লোকজন ছাড়াও এলাকার স্থানীয় অনেক লোক উপস্থিত ছিল।